বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (১৯৭৩-৭৮) আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বীজের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে “বীজ অনুমোদন সংস্থা” নামে ২২ জানুয়ারী ১৯৭৪ সালে এর যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ২২ নভেম্বর ১৯৮৬ তারিখে এর নামকরণ “বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী” করা হয়। সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে উৎপাদিত ও বাজারজাতকৃত নোটিফাইড ফসল যথাঃ ধান, গম, পাট, আলু ও আখ ফসলের বীজ প্রত্যয়ন ও মান নিয়ন্ত্রণে এ সংস্থাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকারী পর্যায়ে উৎপাদিত অনুমোদিত জাতের গুণগত মান যাঁচাই এবং বীজের মান উৎকর্ষতা নিরূপণ করতঃ বীজ প্রত্যয়ন ট্যাগ বা সার্টিফিকেট প্রদানের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সীর উপর অর্পিত হয়। দেশে বীজ ফসলের জাত পরীক্ষাপূর্বক ছাড়করণ/নিবন্ধন থেকে শুরু করে মাঠ পরিদর্শন ও প্রত্যয়ন, পরীক্ষাগারে ও কন্ট্রোল ফার্মে বীজের মান পরীক্ষণ, প্রত্যয়ন ট্যাগ ইস্যুকরণ, মার্কেট মনিটরিং এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে বীজ আইন ও বিধিমালা লংঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ পর্যন্ত সংস্থাটির কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়েছে।জাতীয় তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক (১৯৮৫-৯০) পরিকল্পনা মেয়াদকালীন সময় পর্যন্ত এ সংস্থার দায়দায়িত্ব ছিল, সরকারী পর্যায়ে বিএডিসি’র মাধ্যমে উৎপাদিত নোটিফাইড ফসলের বীজ প্রত্যয়ন করা। পরবর্তীতে চতুর্থ পঞ্চবার্ষিকী (১৯৯১-৯৬) পরিকল্পনায় বীজ শিল্পের সাথে জড়িত বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের উৎপাদিত নোটিফাইড ফসলের বীজও প্রত্যয়নের আওতাভূক্ত করা হয়।এ সংস্থার সকল কারিগরি কর্মকান্ড বীজ অধ্যাদেশ-১৯৭৭, জাতীয় বীজ নীতি-১৯৯৩, বীজ আইন (সংশোধিত)-১৯৯৭, বীজ বিধি-১৯৯৮ ও বীজ আইন (সংশোধিত)-২০০৫ এবং জাতীয় বীজ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছে।বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী প্রত্যয়নকৃত বীজের মানের নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে প্রত্যয়নকৃত বীজের প্যাকেট/বস্তায় প্রত্যয়ন ট্যাগ লাগানোর পূর্বেই মাঠ পরিদর্শন এবং পরীক্ষাগারে বীজের মান পরীক্ষা করে থাকে। বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী এসব কর্মকান্ড অত্যন্ত সতর্কতা ও নিষ্ঠার সাথে করে আসছে।দেশে একটি শক্তিশালী বীজ শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় বীজ নীতি-১৯৯৩ এ, বেসরকারী খাতকে বীজ উৎপাদনে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং সরকারী খাতের পাশাপাশি বেসরকারী খাতে উৎপাদিত বীজের প্রত্যয়ন ও মান নিয়ন্ত্রণের বিধান রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণে এগিয়ে এসেছে এবং বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী তাদেরকে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করে আসছে। এছাড়াও বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী চাষী পর্যায়ে উৎপাদিত বীজ, আমদানীকৃত বীজ ও মার্কেট মনিটরিং-এর আওতাধীন বিভিন্ন বীজ পরীক্ষা করে ফলাফল সরবরাহ করছে। বীজের উচ্চমান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী মাঠ পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রথমে বীজ ফসলের মানসম্পন্ন মাঠের প্রত্যয়নপত্র প্রদান করে এবং প্রত্যয়নপ্রাপ্ত মাঠ হতে পরবর্তীতে সংগৃহীত বীজ নমুনার গুণাগুন সরকারী বীজ পরীক্ষাগারে অনুমোদিত মানের হলে ঐ বীজের জন্য প্রত্যয়ন ট্যাগ ইস্যু করা হয়।
এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে অচিরেই দেশে একটি শক্তিশালী বীজ শিল্প গড়ে উঠবে, বীজের মান উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাবে, ফলশ্রুতিতে দেশে টেকসই খাদ্য নিরপত্তা অর্জিত হবে এবং দেশ কাঙ্খিত সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে।এই উদ্দেশ্য কে সামনে রেখে ‘‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী’’ নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS